রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
পৌচাশিক কায়দায় পিতার হাতে শিশু তুহিন হত্যাকান্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের সুনামগঞ্জের তাহিরপুর অপরহণ নাঠকের ১১ দিনপর খলনায়ক গুণধর পিতার হেফাজত থেকেই রিমন মিয়া নামে নয় বছরের অপহৃত এক শিশুপুত্রতে থানা পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
অভিযুক্ত আলোচিত সেই গুণধর পিতার নাম মো. আজিজুর রহমান ওরফে হেকমত আলী। সে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামের মৃত হাদিস মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার আজিজুরকে ভ্রাম্যমাণ আদালত গণউপদ্রব সৃষ্টির অপরাধে সাজা দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমানের দিক নির্দেশনায় থানা পুলিশ নিজ শিশু সন্তানকে আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে অপহরণ নাঠক সাজাতে গিয়ে কথিত অপহরণ নাটকের ১১ দিনপর সুনামগঞ্জের আবদুজ জহুর সেতুর মুখ থেকে বুধবার রাতে ভিকটিম শিশু রিমনকে উদ্ধার ও খলনায়ক পিতা আজিজুর রহমান ওরফে হেকমকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরিজপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের জামেনা বেগম ও লিপিয়া বেগম নামে দুই স্ত্রীকে ঘিরে পারিবারিক দ্বন্ধ চলছে গত ২২ বছর ধরে।
প্রথম স্ত্রী জামেনার গর্ভের ৪ মেয়ে, ১ ছেলে, দ্বিতীয় স্ত্রী লিপিয়ার গর্ভের ৩ মেয়ে ও ৬ ছেলে সন্তান রয়েছে।
প্রথম স্ত্রী পৃথক থাকলেও আজিজুর ঘটিবাঁটি নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর লিপিয়ার সাথেই আয়েশি জীবন যাপন করে আসছেন।
এদিকে প্রথম স্ত্রী জামেনা নিজে ও সন্তানদের নিয়ে দিন মুজুরির আয়ের নগদ টাকায় সাব কবলায় রেজিষ্ট্রিমুলে কয়েকবছর পুর্বে আজিজুরের কিছু জমা-জমি ক্রয় করলেও ভোগ দখল করে আসছেন আজিজুর।
কিন্তু সেই জমা-জমির দখল বুঝে নিতে গেলে শুরু হয় প্রথম-দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষ থেকে আদালতে দায়ের করা হয় একে অপরকে ফাঁসানোর জন্য পাল্টাপাল্টি মামলা।
এক পর্যায়ে জমির দখল বুঝিয়ে না দিতে প্রথম স্ত্রী জামেনা, তার সন্তান ও মেয়ে জামাইদের উল্টো ফাঁসাতে গিয়ে আজিজুরের সহযোগিতা দ্বিতীয় স্ত্রী লিপিয়া বেগম নিজের ৯ বছরের শিশুপুত্র রিমনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে গত ৬ অক্টোবর তাহিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
তাহিরপুর থানার এসআই মো. গোলাম মোস্তাফাকে তদন্তভার দেয়া হলে পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমানের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিশু রিমনের অবস্থান কিশোরগঞ্জের ভৈরবের চন্ডিবের গ্রামে তার খালুর বাসায় শনাক্ত করেন।
১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত থেকে মামলার তদন্তকারি অফিসার একদল পুলিশ নিয়ে ভৈরবের চন্ডিবের গ্রাম হতে ভিকটিমকে উদ্ধার করতে গেলে চতুর গুণধর পিতা আজিজুর ফের নিজ শিশুপুত্র রিমনকে গুম বা হত্যার পরিকল্পনা আঁটতে থাকেন।
এরই ধারিবাহিকতায় বুধবার সকালে ভৈরব খালুর বাড়িতে থেকে সরিয়ে রিমনকে নিয়ে একটি বাসযোগে সুনামগঞ্জ আসার পথেই বুধবার রাতে তাহিরপুর থানার ওসি মো. আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারি অফিসার এসআই মো. গোলাম মোস্তফা ও থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম সুনামগঞ্জ জেলা শহরের প্রবেশমুখ আবদুজ জহুর সেতুতে মামুন পরিবহন নামের একটি বাসে তল্লাশী চালিয়ে ভিকটিম রিমনকে উদ্ধার ও আজিজুরকে গ্রেফতার করেন।
এ ঘটনায় বুধবার রাতেই আজিজুরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুনতাসির হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২৯১ ধারায় (গণউপদ্রব্য) সৃষ্টির অপরাধে গুণধর আজিজুরকে ১ মাসের কারাদন্ডের রায় প্রদান করেন।
বৃৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সময়মত শিশু রিমনকে পুলিশ উদ্ধারে ব্যর্থ হলে হয়তো এ শিশুটিকেও দিরাইয়ের শিশু তুহিনের মত বলিরপাঠা বানানো হত প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও সামান্য সম্পক্তির জমি জমার দখল বুঝিয়ে না দিতে।